বাংলাদেশের অর্থনীতিতে লিকুইডিটি ক্রাঞ্ছ
২০১৯ এর লিকুইডিটি ক্রাঞ্ছ , আমার কাছে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় একটা ঘটনা মনে হয়। এখন যে ক্রাইসিসটা দেখা যাচ্ছে, তার একটা রুপ ২০১৯ এই শুরু হয়েছিল। এবং কভিড এসে উদ্ধার না করলে, বর্তমান সংকটটা ২০২০ এই সংগঠিত হইতো।
২০১৭-১৮ তে কারেন্ট একাউন্টের ঘাটতি ১০ বিলিয়ন, ট্রেড ডেফিসিট ১৮ বিলিয়ন ডলার, ২০১৮-১৯ এ কারেন্ট একাউন্ত ঘাটতি ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ও ট্রেড ডেফিসিট ১৫.৮ এ পৌছায়। ওভার অল ঘাটতি এই দুই বছরে ১ বিলিয়নের কাছাকাছি থাকলেও পূর্বের বছর গুলোর ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার সারপ্লাসের জায়গায় এই সময় রিজার্ভ নেগেটিভ হইতে থাকে। ফলে সিচুয়েশানটা এমন ছিল উন্নয়নের লুটের ভোগ যদি একটা টান দেয় তবে রিজার্ভে একটা বড়সড় ঘাটতি ২০২০ ক্যালেন্ডার ইয়ারেই শুরু হইতো।
এই ঘাটতির ফলে লিকুইডিটিতে বড় প্রভাব পরতো।
এক দিকে রিজার্ভ ঘাটতি, অন্য দিকে লিকুইডিটি ক্রাঞ্ছ। এই দুইটা থেকেই অর্থনীতিকে উদ্ধার করে দেয় কভিড। কভিডের কারনে আমদানি কমে আসার কারনে, লিকুইডিটি ও রিজারভ দুইটাই বৃদ্ধি পায়। যার ফলে, উন্নয়ন ভোগের টান ২০২১ এও বাংলাদেশ সামাল দেয় কিন্তু, ২০২২ এ এসে অর্থনীতি টালমাটাল হয়ে পরে।
বিগত এক দশকের পরজবেক্ষন থেকে আমার একটা হাইপোথেসিস হইলো, বাংলাদেশের ফিনান্সিয়াল ক্রাইসিসের প্রধান একটা ধাপ লিকুইডিটি ক্রাঞ্ছ ।
কারন, নানাবিধ।
ব্যাঙ্কিং সেক্টরে খেলাপি ঋণ, বিওপি ঘাটতি ও স্ট্যাগ্নেন্ট অর্থনীতির সময়ে লিকুইডিটি সংকুচিত হবে। সরকার টাকার খোজে দিশেহারা হয়ে যাবে। যেহেতু সরকার ব্যাংকের কাছে ঋণ নিতে পারবে না, সেই সময়ে সরকার বিভিন্ন মেকানিজমে টাকা ছাপাবে।
এখন তাই হচ্ছে, ডিভল্ভমেন্টের নাম দিয়ে টাকা ছাপাচ্ছে।
ফলে, এইটা একটা ইনফ্লেশান ট্রিগার করবে, যে ইনফ্লেশান সরকার মিথ্যা ডাটা দিয়ে ঢেকে রাখবে।
রাইট এট দিস মোমেন্ট এই পুরো প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
উন্নয়ন বিভ্রমের আরেকটা প্রধান আরগুমেন্ট হচ্ছে, সরকার প্রতিটা ক্রাইসিসের দায় জনগণের উপরে চাপায় দিতে থাকে এবং অধিকাংশ ক্রাইসিসকে সরকার, মূল্যস্ফীতিতে ট্রানফার করে।
লিকুইডিটি ক্রাঞ্ছের দায়ে জনগণের উপরে মূল্যস্ফীতি চাপায় দেওয়াটাও সেই ধরনের একটি প্রবণতা।
কিভাবে এইটা সরকার করতে পারে, সেই আলোচনা বড়। আশা করি, পডকাস্টিং শুরু করার পর সেইটা ব্যাখ্যা করবো। (ইনশাল্লাহ জানুয়ারি থেকে পডকাস্টিং আবার শুরু হচ্ছে।)
ফলে, আল্টিমেটলি সরকারের মিসম্যানেজমেন্ট ও সার্বিক ক্রাইসিসের দায়ে আপনার কাধে চেপে বসবে অসহনীয় দ্রব্য মুল্যের বোঝা।
এইটাই উন্নয়নশোধন।
ফলে অনেক বিশ্লেষক যেভাবে ক্রাইসিস চিহ্নিত করতেছে, যে রিজার্ভ যখন শুন্য হয়ে যাবে তখনই মুল ক্রাইসিস, আমি সেইটা সম্পূর্ণ এগ্রি করি না।
আমার আরগুমেন্ট হচ্ছে, আপনি ক্রাইসিসের ভেতর দিয়েই যাচ্ছেন, ক্রাইসিসটাকে ট্রান্সফার করা হচ্ছে মূল্যস্ফীতিতে, এবং মূল্যস্ফীতির ডাটা ভয়াবহ জোচ্চোরি করে জাস্ট মিডিয়া হেজেমনি ব্যবহার করে সেই ক্রাইসিসের রুপ পালটে দেওয়া হয়েছে মাত্র।
কোন মন্তব্য নেই
Thanks for your comment