Breaking News

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শেষ প্রস্তুতি

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শেষ প্রস্তুতি
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শেষ প্রস্তুতি


এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শেষ প্রস্তুতি


“অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে”, “আর মাত্র হাতে গুনে কয়দিন”, “তোমার দ্বারা হবে না”… টেস্টের পর এ ধরণের কথাগুলো যেন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, নাকি? নিজের চিন্তার সাথে  বাবা-মা’র চিন্তাযোগে চিন্তিত হওয়ার পাল্লাটা যতদিন যাচ্ছে, আরো ভারি হচ্ছে, তাই না? পরীক্ষার শেষ মুহূর্তগুলোতে বইয়ের হাজার পাতার ভারের সাথে যোগ হয় নিজের থেকে আর আশপাশ থেকে ব্যাপিত হওয়া দুশ্চিন্তা।
এই দুশ্চিন্তা খুবই স্বাভাবিক। এই দুশ্চিন্তাকে জয় করে পরীক্ষার আগের ‘হাতে গোনা‘ বাকি সময়টুকু যদি ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে ভালো ফলাফল করা খুব কঠিন হবে না। বিভিন্ন বিষয় একটু বুদ্ধি করে, রুটিনে ফেলে শেষ করতে হবে, এই যা! তবে রুটিনটি হতে হবে সম্পূর্ণ নিজের। অতঃপর পরামর্শ দেয়া-নেয়ার প্রক্রিয়াটা তো খুবই পুরোনো একটা ঐতিহ্য!

গণিতঃ

নতুন করে কোনো অধ্যায় না ধরলেই ভালো। যে যে অধ্যায় আছে, তা বারবার অনুশীলন করতে হবে। কোন অধ্যায় কেমন গুরুত্বপূর্ণ, স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে মোটামোটি ধাণা হয়ে গিয়েছে নিশ্চয়ই। সেই অধ্যায়গুলোর উপর যে অঙ্কের সমস্যা হাতের কাছে পাবে, সেটাই সমাধান করার চেষ্টা করবে। 

ইংরেজিঃ

ইংরেজির ক্ষেত্রেও নতুন করে প্রস্তুতি শুরু করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বরং যা শেখা আছে আর জানার মধ্যে আছে, তাই বারবার অনুশীলন করা সমীচীন। দুই পত্রের ক্ষেত্রে একইভাবে এগোনো উচিত।

বাংলাঃ

এসএসসি তে বাংলায় দুইটি পত্রের উপর পরীক্ষা হবে। মানবণ্টন ইতোমধ্যেই জানা হয়ে গিয়েছে হয়তো। বাংলা যতই সহজ হোক না কেন, অন্যান্য বিষয়ের মতো বাংলাকেও গুরুত্ব দিয়ে পড়া উচিত। দিনে এক ঘণ্টা অঙ্ক কষলে অন্তত আধঘণ্টা বাংলার পিছনে ব্যয় করতে হবে। ১ম পত্রে গদ্য এবং পদ্যগুলো পড়া শেষে কবি পরিচিতিতে ঢুঁ মেরে আসতে পারো। অনেকেই আছো যারা গল্পের বই পড়তে ভালবাসো। প্রস্তুতির সময়টাতেও বই না পড়ে থাকাটা যেন ভীষণরকম আত্মত্যাগের পর্যায়ে পড়ে। তাদের ক্ষেত্রে, গল্পের বইয়ের যদি দশপাতা পড়া হয়ে থাকে, তবে বাংলা পাঠ্য বইয়ের বিশ পাতা পড়ে ফেলো। বাংলা ২য় পত্রের ক্ষেত্রে ব্যাকরণে যদি কোনো অধ্যায় এখনো না পড়া থাকে, তবে নতুন করে পড়া শুরু করার দরকার নেই। বরং স্কুলে পরীক্ষা নেয়া প্রশ্নগুলো সমাধান করে ফেলো, একটি করে, প্রতিদিন। সামাধান করতে গিয়ে পাওয়া ভুলগুলো শুধরে নিতে বই খুলে তোমার উত্তর ভুল হওয়ার কারণ দেখে নাও। এভাবে একটা ভুল শুধরে নিলে, দশটা নতুন তথ্য জানতে পারবে আর ব্যাকরণ ধীরে ধীরে আয়ত্তে আসবে। রচনা ও ভাব-সম্প্রসারণ বাংলা ১ম পত্রের মতো করে আয়ত্তে এনে ফেলতে পারো।
রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে এগোলে প্রস্তুতি বেশ ভালো হবে। এসএসসি কিংবা যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার আগে যেটা হয়,সেটা হলো, আমরা ‘শর্ট সাজেশন’ কিংবা নানামুখী পরামর্শ দ্বারা প্রভাবিত হই। এই প্রভাবটুকুকে পুঁজি করে পরদিন থেকে ভালো করে প্রস্তুতি নেয়ার অঙ্গীকার নেই। পরে এই ‘পরদিন’ আসতে আসতে পরীক্ষা চলে আসে। নেহাত হাতে সময় কম, কিন্তু এই কম সময়ে আছে প্রচুর সেকেন্ড। এই সেকেন্ডগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। সারদিন না! নিজের সাথে নিজে পরামর্শ করে একটা রুটিন সেট করে ফেলো এবং সে অনুযায়ী পড়া এগোনোর ব্যাপারে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকো। ‘চেষ্টা’ কখনো বিফলে যায় না এবং ‘ইচ্ছা’ প্রচণ্ড রকমের শক্তিসম্পন্ন। এই দুইয়ের মিশ্রণ সময়ের মতো শক্তিশালী উপজীব্যকেও হার মানতে বাধ্য করে। তাই ‘দুশ্চিন্তা’, ‘হতাশা’ এবং পৃথিবীর যাবতীয় নেতিবাচকতাকে বিদায় দিয়ে সবচেয়ে সেরা প্রস্তুতি নেয়া শুরু হোক, এখনি!

শেষ মুহূর্তের জন্য কিছু কথাঃ

১. এতোদিন হয়তো ‘টেস্টের পর পড়া যাবে’ বলে নিজেকে বুঝ দিয়েছে অনেকেই। এখন একদম নতুন করে প্রথম অধ্যায় থেকে পড়ার পরিকল্পনায় আছে অনেকেই। যদিও আমরা ‘নিজের মতো করে পড়ো’ নীতিতে বিশ্বাসী, তবুও, এই পদক্ষেপ নেয়াটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
২. সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই যেটা করবেঃ বইয়ের সূচীপত্র লেখা পাতায় যাও।সেখানে দেখো, কোন অধ্যায়গুলো পড়া হয়েছে। সেই অধ্যায়গুলো থেকে স্কুলের পরীক্ষাগুলোতে কেমন প্রশ্ন এসেছে। শুধুমাত্র সেই অধ্যায়গুলো রিভিশনে রাখো।
৩. নতুন করে কিছু শুরু করাটা সমীচীন না ঠিক। তবে, সূচীপত্রে পড়া বিষয়গুলো দাগ দেয়ার পর খেয়াল করে দেখো, বইয়ের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ শেষ হয়েছে কিনা।
৪. যদি না হয়ে থাকে, তবে তোমার পড়া অধ্যায়গুলোর সাথে খাপ খায়, এমন অধ্যায়গুলো খুঁজে বের করো। একটা নির্দিষ্ট সময় বাঁধো। দিন আর রাতের যেকোনো একটা সময় যেই অধ্যায়গুলো পড়া হয়নি, সেগুলো পড়ার জন্য বরাদ্দ করো। আর বাকি সময় পড়ে থাকা অধ্যায়গুলো রিভিশনে রাখো।
৫. মনে রেখো, এখন সময় ‘ব্যয়’ করার মতো সময় নেই ঠিক। কিন্তু ‘ইনভেস্ট’ করার মতো অসংখ্য সময় আছে। সময়টাকে খুব কৌশলে ইনভেস্ট করো।
৬. অনেকে অনেক কথা বলেছে, অনেক পরামর্শ দিয়েছে। পছন্দের মানুষগুলো চিন্তিত হবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। তুমিও তাদের পরামর্শগুলোর চাপে হতভম্ব হয়ে যাবে, এটাও স্বাভাবিক। তবে এরকম চাপের মধ্যেই নিজেকে সামলে নেবার চেষ্টা করতে হবে। ভুলে যাও যে কেউ তোমাকে কোনো প্রকার পরামর্শ দিয়েছেও। পরীক্ষা তোমার, প্রস্তুতি তোমার, ফলাফলও তোমার উপর। তাই নিজের পরামর্শ অনুযায়ী এগিয়ে যাও। সবশেষে, ‘এসএসসি’! শব্দটা শুনতেই হয়তো মনে হবে, কানের নিচে বোমা পড়লো। কিন্তু, বিশ্বাস করো, এসএসসি কিছুই না। আসলেই কিছু না। শেষ মুহূর্তের সময়টুকুকে যে বুদ্ধি করে কাজে লাগাবে, তার দ্বারা এসএসসি জয় হবে, এসএসসি পরবর্তী ছুটির চায়ের কাপ!
Source: 10minutes school

কোন মন্তব্য নেই

Thanks for your comment